পোশাক, সাজগোজ, স্টাইলিং – আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ভীষণভাবে একাত্ব হয়ে আছে। আর সেই কারণেই তৈরি হচ্ছে নিত্যনতুন ব্র্যান্ড। ‘চন্দ্রাবলী’ এইরকমই একটি ব্র্যান্ড যারা বর্তমান সময় ও গ্রাহকদের রুচির কথা মাথায় রেখে তৈরি করছে হাল-ফ্যাশনের নানান পোশাক ও গহনা। মূলত এথনিক কারুকার্য, নকশা ও সুন্দর বৈচিত্র্যময় পপ-আপ রঙ নিয়ে কাজ করে চন্দ্রাবলী।

চন্দ্রাবলীর কর্ণধার শ্রীমতী শ্রমনা গুপ্ত। তিনি জানান, ফ্যাশনের প্রতি তাঁর আগ্রহ ছেলেবেলা থেকেই ছিল। তিনি ভীষণ সিনেমা–প্রেমী মানুষ, ৭০-এর দশকের সিনেমার নায়িকাদের সাজ-পোশাক তাঁকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করত। স্কুল-জীবনেই তিনি এই ভিনটেজ ফ্যাশন সংস্কৃতির প্রতি বিশেষ উৎসাহী হয়ে ওঠেন এবং তাঁর নিজের মন কোথাও গিয়ে তাঁকে জানান দেয় যে তিনিও এইরকম পোশাক নিজে তৈরি করতে চান, অর্থাৎ ফ্যাশন জগতে কাজ করতে চান। ভারতীয় সংস্কৃতি যেমন বৈচিত্র্য আছে তেমনই বৈচিত্র্য তিনি পোশাকে, স্টাইলিং-এ নিয়ে আসতে চান। তিনি বরাবরই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে নিজে কিছু করতে চেয়েছেন জীবনে, চন্দ্রাবলী তার সেই ইচ্ছে পূরণ করেছে।

প্রতিটা কর্মকাণ্ডেরই সুচনার নেপথ্যেই যেমন কিছু কারণ থাকে তেমনি থাকে কোনও না কোনও অনুপ্রেরণা। চন্দ্রাবলীর কর্ণধার জানিয়েছেন তাঁর এই ব্র্যান্ড তৈরির জন্য মূল অনুপ্রেরণা – তাঁর পরিবার, বিশেষত তাঁর মা। এমনকি এই চন্দ্রাবলী নামটাও তাঁর মায়েরই নাম। এছাড়াও তিনি বলেন যে, রাস্তা-ঘাটে চলতে চলতে যেকোনও মজাদার নকশা বা বিশেষ কোনও কারুকাজ দেখলে তা থেকেও আইডিয়া নিয়ে কাপড়ে নকশার কাজে লাগানো হয়।

চন্দ্রাবলী যাত্রা শুরু করে খুব সাধারণ একটা গহনার ব্র্যান্ড হিসেবে তারপর ক্রমে পোশাকের বিভাগটি চালু হয়। ধীরে ধীরে যা অন্যান্য সাধারণ ব্র্যান্ডের থেকে চন্দ্রাবলীকে আলাদা করে তোলে তা হল – গ্রাহকদের প্রতি তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গি। তাঁদের পণ্য সংক্রান্ত যেকোনো ধরনের সমস্যায় গ্রাহকদের পাশে থাকা এবং দ্রুত তার সমাধান করার নিশ্চয়তাই গ্রাহকদের মনে আরও বেশি বিশ্বাস ও ভরসার সঞ্চার ঘটিয়েছে।

একাধিক দক্ষ কারিগর এবং অন্যান্য কর্মী রয়েছেন যারা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন নকশায়, রঙে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলছেন আমাদের ঐতিহ্যবাহী পোশাককে। এখানে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত প্রশংসনীয় বিষয় হল – যারা চন্দ্রাবলীতে বিভিন্ন বিভাগে কাজ করছেন তাঁদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষজন রয়েছেন, যারা করোনা পরিস্থিতিতে নিজেদের কাজ হারিয়েছিলেন। শ্রীমতী শ্রমনা গুপ্ত সেই সমস্ত মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন বিচিত্র রং, নকশা – যা তাঁদের জীবনেও রঙের সঞ্চার ঘটিয়েছে ওইরকম কঠিন পরিস্থিতিতে।

চন্দ্রাবলীর নকশায়, কারুকার্যে বা রঙে এই বৈচিত্রের মধ্যে কিন্তু কালো রঙের বিশেষ ভূমিকা লক্ষ করা যায়। চন্দ্রাবলীর আরেকটি বিশেষত্ব হল ঋতুর সঙ্গে সামাঞ্জস্য রেখে পোশাকে রঙের ব্যাবহার। আগামী দিনের জন্য অনেক স্বপ্ন নিয়ে অনেক পরিশ্রম নিয়ে এগিয়ে চলেছে চন্দ্রাবলী, গ্রাহকদের কাছে ভারতীয় টেক্সটাইলের সম্পদ পৌঁছে দিতে চায় নতুন রূপে এবং সাশ্রয়ী মুল্যে। চন্দ্রাবলীর কর্ণধার বলেন, “আমি চাই চন্দ্রাবলী একটা পরিবারের নাম হোক।”