গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|

ডাইনোসরের আমলে তাদের অস্তিত্ব ছিল, পরে বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে মনে করা হয়। এমনই একটি জীবাশ্ম মাছকে আবার জীবিত দশায় দেখা গেল! আজ থেকে ৪২০ মিলিয়ন বছর আগের এই মাছ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মাদাগাস্কার উপকূলের পশ্চিম ভারত মহাসাগরে জীবন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

মাছটির নাম কোয়েলাকান্থ (Coelacanth)। এই মাছটি দুর্ঘটনাক্রমে একদল দক্ষিণ আফ্রিকার হাঙর শিকারীর জালে ধরা পড়ে। মোংবায়ে নিউজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেলেরা তাদের হাঙর শিকারের অভিযানে গিল নেট ব্যবহার করায় মূলত এই আবিষ্কারটি সম্ভব হয়েছিল। উচ্চ প্রযুক্তির গভীর সমুদ্রের জালগুলি কোয়েলাকান্থসটিকে সংগ্রহ করতে এমন জায়গায় পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছিল, যা সমুদ্র পৃষ্ঠের প্রায় 328-492 ফুট নীচে।

কোয়েলাকান্থ ১৯৩৮ সালে বিলুপ্ত হয়ে যায়, তার পর থেকে এই মাছটি জীবিত অবস্থায় পাওয়া এটাই প্রথম ঘটনা। সাম্প্রতিক মাছটির এই পুনরায় আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের কাছে একটি বড়সড় ধাক্কা ছিল। তারা মাছটির আটটি পাখনা, একটি বৃহত দেহ এবং এর আঁশগুলিতে একটি নির্দিষ্ট প্যাটার্ন সহ এটিকে ‘লাটিমেরিয়া চালুমনা’ (Latimeria chalumnae) প্রজাতির সদস্য হিসাবে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিল। এই প্রজাতির মাছগুলি সমুদ্রের গভীরের পাথুরে এলাকায় ১০০ থেকে ৫০০ মিটার গভীরতায় বাস করে। এদের ওজন ৯০ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।

বর্তমানে সামুদ্রিক বিজ্ঞানীরা মাছটি রক্ষার জন্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা পুনর্বহাল করার আহ্বান জানিয়েছেন। ধারণা করা হয় যে, হাঙর ডানা ও তেলের চলমান চাহিদা বর্ধিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই মাছের আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে। উন্নত গিল নেটের ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে, যা নিয়মিত ফিশিং নেট থেকে আরও গভীরতর যেতে পারে।

দক্ষিণ আফ্রিকার সাম্প্রতিক গবেষণার শীর্ষস্থানীয় লেখক অ্যান্ড্রু কোক বিজ্ঞান বিষয়ক একটি জার্নালে বলেছেন, “আমরা যখন বিষয়টিকে আরও খতিয়ে দেখি তখন অবাক হয়ে যাই, যদিও মাদাগাস্কারে কোয়েলাকান্থস-এর উপর নজরদারি বা সংরক্ষণের জন্য কোনও প্রক্রিয়াকর্মী কাজ হয়নি।” তবে জার্নালটিতে এ-ও উল্লেখ রয়েছে যে, আন্তর্জাতিক সমুদ্রে হাঙর শিকারের চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাছটির বেঁচে থাকার জন্য নতুন হুমকির মুখোমুখি হতে পারে।

এছাড়াও গবেষকরা গবেষণাপত্রে লিখেছেন, “হাঙর ধরতে ব্যবহৃত জারিফা গিল নেটগুলি তুলনামূলকভাবে নতুন এবং আরও মারাত্মক উন্নতমানের, কারণ এটি আকারে অপেক্ষাকৃত বড় এবং অনেক গভীর জলের মধ্যে স্থাপন করা যায়।”

ছবিঃ এএফপি