গল্প কুটির ওয়েব ডেস্ক|

সাধারণত পাখির তুলনায় এদের ঠোঁট অনেকটাই ভোঁতা। মুখগহ্বর চওড়া, চোখ হ্লুদ-কালো। সতেজ, সবুজে গাছের বদলে এরা শুকিয়ে যাওয়া, ভাঙা বা মৃত গাছের ডালে থাকতেই পছন্দ করে। এটি একটি সাধারণ পাখি হলেও হঠাৎ করে দেখলে সহজেই চমকে উঠবেন দিবালোকেও। রাতের অন্ধকারে এদের অদ্ভুত ডাক শুনে গায়ে শিহরণ জাগতে বাধ্য।

এতক্ষণ যে পাখিটিকে নিয়ে আলোচনা করা হল তার নাম পোটো। তবে অনেকই পাখিটিকে গোস্ট বার্ড বা ভূতুড়ে পাখি বলেও ডাকে। দেখতে অদ্ভুত এবং ভয়ানক ডাকের জন্যই এমন নামকরণ।

পোটো একটি নিশাচর পাখি। রাত হলেই এরা কীট-পতঙ্গ শিকার করতে বেরিয়ে পরে। সারাটা দিন এরা সময় কাটায় শুকনো বা ভাঙা কোনও গাছের ডালের একেবারে মাথায় বসে থেকে। ভাঙা গাছের ডালের মাথায় বসে থাকার একমাত্র কারণ হল, শিকারিদের হাত থেকে প্রাণে রক্ষা পাওয়া।

পোটো পাখিদের রঙ এবং রূপে হঠাৎ করে চেনা দায় যে এরা পাখি। একঝলক দেখে মনে হবে যে গাছের শুকনো ডাল। শারীরিক গঠনের জন্য গাছের ডালের সঙ্গে খুব সহজেই মিশে যেতে পারে পোটোরা। এমনকি দীর্ঘক্ষণ স্ট্যাচুর ন্যায় কোনোরকম নড়াচড়া না করেই বসে থাকতে পারে এরা।

পোটো পাখিদের কোকিলের সঙ্গে একটি মিল রয়েছে। এরা বাসা বাঁধতে পারে না। তবে কোকিলের মতো অন্য পাখির বাসায় ডিম না পেড়ে পোটো গাছের ডালের কোনও কোঠরেই ডিম পাড়ে। তবে মজার বিষয় হল এদের ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা বার করার দায়িত্ব থাকে মূলত বাবা পোটোদের উপর। তারা দিনের প্রতিটাক্ষণ ডিমের পাহারা দেয়। অবশ্য রাত হলেই মা এবং বাবা পোটো যৌথভাবে বাচ্চার দেখাশোনা করে।

পোটো মূলত মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকার একটি নিশাচর পাখি। তবে ইউরোপেও আগে দেখা মিলত এদের। মাঝে এই পাখি লুপ্তপ্রায় হয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ ১৫ বছর পর গত ডিসেম্ব মাসের এই পাখির দেখা মিলেছিল। সম্প্রতি কলম্বিয়ার চিবোলো শহরে পোটোর দেখা মিলেছে।

https://www.youtube.com/watch?v=cDyJjqE-yqQ
পোটো পাখির একটি ভিডিও